কলাপাড়ায় আমফান গেলেও দুঃখ যায়নি Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




কলাপাড়ায় আমফান গেলেও দুঃখ যায়নি

কলাপাড়ায় আমফান গেলেও দুঃখ যায়নি




কলাপাড়া প্রতিনিধি॥ পাঁচ জনের সংসার কোহিনুর বেগমের। রাবনাবাদ নদীর ভাঙ্গনে চার দফা ঘর পাল্টেছেন। ছিলেন ভাঙ্গা বেড়িবাঁধের উপরেই। সবশেষ আমফান তান্ডবে বাঁধের পাশের ঘরসহ সব শেষ। বাঁধটি মিশে গেছে মাটির সঙ্গে। এখন শুধু ভিটি পড়ে আছে। ওই ভিটিতে নতুন দেয়া ছাপড়ার ঘরটিও ঈদের সকালে, সোমবার অস্বাভাবিক জেয়ারে ডুবে যায়। চাল চুলা পর্যন্ত নেই।

 

এখন আল্গা চুলায় গ্রামে চলাচলের রাস্তায় গিয়ে রান্না করছেন। স্বামী হাসমত আলীর উপার্জন নেই। রাক্ষুসে রাবনাবাদ সব কেড়ে নিয়েছে, তবে পাষান ওই নদী এখনও জীবিকার যোগান দেয়। কিন্তু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আরেক বিপর্যয় নেমেছে এ পরিবারে। করোনার দূর্যোগের সঙ্গে আমফানের তান্ডবের পরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। যেন ভয়াল বিপর্যয়ের শঙ্কায় পরিবারটি।

 

চিড়েচ্যাপ্টা অবস্থায় কাটছে জীবন-জীবিকার প্রত্যেকটি মুহুর্ত। একই দশায় আলে বেগম- সেলিম দম্পতি। ছয় জনের সংসারে ঈদের দুপুরে এক মুঠে ভাতের জন্য রাস্তায় গিয়ে রান্না করছেন। ভরসা কাঠের তক্তার ওপরে মাটির আল্গা চুলা।

এভাবে রাস্তার উপরে রেশমা-রুস্তুম দম্পতির রান্নার কাজও চলছে। অন্তত ২০টি পরিবারের এমন দূর্গতির দৃশ্য দেখা গেল। জানালেন, রাতে মেম্বার রবিউলের দেয়া সেমাই চিনিতে ঈদের সকাল পার করেছেন। এখনও ত্রাণের পাওয়া খাদ্য সহায়তা ভরসা। ২০০৭ সালের পর থেকে এভাবে ফি বছর বর্ষা মৌসুমের পাঁচটি মাস কাটছে নিত্য দূর্যোগের সঙ্গে। দূর্ভোগ যায়না।

 

পরিণত হয়েছে সিজনাল দূর্যোগে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া মৌসুমি ঝড়োহাওয়া ঘুর্ণিঝড় বাড়তি বিপদে ফেলছে। কৃষি কামলা দেয়া এ মানুষগুলে জীবনের প্রয়োজনে পেশা পাল্টে ফেলেছেন। চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি পর্যন্ত নেই। শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে চলাচল করতেন। কিন্তু বর্ষায় আর উপায় থাকেনা। চলতে হয় নৌকায়। রাবনাবাদ পাড়ের মানুষের কাছে যেন লন্ডভন্ড হওয়া এক জনপদ।

 

মেম্বার রবিউল ইসলাম জানালেন, সবচেয়ে বড় প্রায় চার শ’ পরিবারের বাস ছিল চারিপাড়া গ্রামটিতে। নিত্য অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাপটায় ঘরবাড়ি নষ্ট হওয়ায় শতাধিক পরিবার অন্যত্র গিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকছে। আর যারা এখনও থাকছেন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে। খেয়ে, না খেয়ে, নাকানি-চুবানির মধ্যে। তবে এবারের আমফান তান্ডব সইতে পারছেন না মানুষ। কারণ পানি মাত্রাতিরিক্ত লোনা। দিনে দুই বার জোয়ারে প্লাবিত হয়। প্লাবনের পানি ভাটায় নামছেনা।

 

মেম্বার জানালেন, নয়াকাটা গ্রামটি নদী গিলে খেয়েছে আগেই। এ গ্রামের মানুষ রাস্তা কিংবা বেড়িবাঁধে থাকতেন। এখন অসহায়। তবে আমফানে প্লাবিত ১৬ গ্রামের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি বিপাকে এই দুই গ্রাম ছাড়াও চৌধুরিপাড়া, ধঞ্জুপাড়া, ১১ নং হাওলা, বানাতি, নাওয়াপাড়া, ছোট পাঁচ নং ও মুন্সীপাড়ার মানুষের।

 

এসব পরিবারের ঈদের আনন্দ পরিণত হয়েছে বিষাদে। নয়টি গ্রামের মানুষের ঈদের উৎসব নেই। এসব মানুষের অভিযোগ যুগ পেরিয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধটি পুনঃনির্মাণ করছেন না। এছাড়া গ্রমের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটও মেমরামত করতে এগিয়ে আসছেন না কোন জনপ্রতিনিধি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এপথে আসা সকলের ছবির দেখা মেলে অসংখ্য।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD